লাভলি রানা প্লাজার
একজন আহত শ্রমিক। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজায় আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়।
লাভলি একটু সুস্থ্য হয়ে সেও আমাদের সাথে উদ্ধার কাজে যুক্ত হন। যেহেতু লাভলি রানা প্লাজায়
অবস্থিত কারখানার শ্রমিক ছিল তাই তার বেশীর ভাগ শ্রমিকের সাথে পরিচিত ছিল বলে আমাদের
উদ্ধার কাজ এবং আহত-নিহত শ্রমিকদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা সহজ হচ্ছিল। আমরা লাভলির
সহয়তায় বহু আহত শ্রমিক পরিবারের কাছে বিভিন্ন রকম সহায়তা পৌছে
দিয়েছি। অনেক বাচ্চাদের স্কুলে পাঠিয়েছি। রানা প্লাজায় আহত-নিহত শ্রমিকদের
ক্ষতিপূরন-পূনবাসন-সু-চিকিৎসা ও রানা প্লাজার ভবন মালিক সোহেল রানা ও কারখানা
মালিক সহ দায়ী বেক্তিদের গ্রেফতার ও শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য জন্য আমরা যে
আন্দোলন গড়ে তুলেছিলাম তার প্রধান ভূমিকায় ছিল এই লাভলি। পরবর্তীতে এই লাভলিকে
সভাপতি করে রানা প্লাজা গার্মেন্ট ট্রেড শ্রমিক ইউনিয়ন গঠন করা হয়। লাভলির মা রানা
প্লাজায় আহত হয়েছিলেন তার একপায়ের রগ কেটে গিয়েছিল। লাভলির বাবা একজন রিক্সা চালক
ছিলেন। এত দারিদ্রতার মধ্যে লাভলির পরিবার কোন দিন কোন সহয়তা লাইনে দাঁড়াতে
দেখিনি। লাভলি রানা প্লাজা গার্মেন্ট ট্রেড শ্রমিক ইউনিয়ন এর সভাপতি হয়ে রানা
প্লাজায় আহত-নিহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরন-পূনবাসন-সু-চিকিৎসা ও রানা প্লাজার ভবন
মালিক সোহেল রানা ও কারখানা মালিক সহ দায়ী বেক্তিদের গ্রেফতার ও শাস্তি নিশ্চিত
করার দাবীর আন্দলনে যুক্ত হওয়ার কারণে তাকে অনেক হুমকি-ধামকির শিকার হতে হয়েছে,
তবুও সে পিছু পা হয়নি। লাভলির নিরাপত্তার কথা ভেবে লাভলির বাবা মা তাদের এলাকার
একটা ছেলের সাথে বিয়ে দিয়ে দেন। কয়েক বছর আগে লাভলি ও তার বাচ্চার সাথে দেখা
হয়েছিল তখন এই ছবিটা তুলেছিলাম। এখন লাভলি কোথায় আছে কি অবস্থায় আছে জানা নেই।
এই
লাভলিদের মত অনেকের অবদানে রানা প্লাজায় আহত-নিহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরন-পূনবাসন-সু-চিকিৎসার
জন্য অনেক দেশী-বিদেশী মানুষ সহয়তার জন্য এগিয়ে এসেছিল। অনেকে এই সহয়তাকে কাজে
লাগিয়ে অনেকে সম্পদের মালিক হয়েছে, অনেক এনজিও, হাসপাতাল ফুলে ফেপে বড় হয়েছে আবার
কেও এমপি- মন্ত্রী হয়েছে। আর রানা প্লাজার ক্ষতিগ্রস্থ শ্রমিকরা ক্ষতিগ্রস্থই রয়ে
গেছে।
No comments:
Post a Comment