Followers

Tuesday, April 11, 2023

শ্রমিক সংগঠন গুলোর মতামতের তোয়াক্কা না করেই মজুরী বোর্ডে শ্রমিক প্রতিনিধি নিয়োগ দিয়েছে সরকার

 

রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর জন্য নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠন করেছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। এর ফলে পাঁচ বছর পর পোশাকশ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হতে যাচ্ছে।

সাধারণ নিম্নতম মজুরি বোর্ড ছয় সদস্যের হয়ে থাকে। তার মধ্যে চার সদস্যের একটি স্থায়ী কমিটি রয়েছে। তার সঙ্গে যুক্ত হন মালিক ও শ্রমিকপক্ষের দুজন প্রতিনিধি।

মজুরি বোর্ডে মালিকপক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান। ২০১৮ সালের সর্বশেষ মজুরি বোর্ডেও মালিকপক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। অন্যদিকে শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম। তিনি ২০১৩ সালের মজুরি বোর্ডে শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

নিম্নতম মজুরি বোর্ডের ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী, চার সদস্যবিশিষ্ট স্থায়ী নিম্নতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান হচ্ছেন সিনিয়র জেলা জজ লিয়াকত আলী মোল্লা। অন্য সদস্যরা হলেন মালিকপক্ষের প্রতিনিধি বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের উপমহাসচিব মকসুদ বেলাল সিদ্দিকী, শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি জাতীয় শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহম্মদ। নিরপেক্ষ প্রতিনিধি হিসেবে আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামাল উদ্দিন।

১৯৯৪ সালে শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ছিল ৯৩০ টাকা। ২০০৬ সালে সেটি বৃদ্ধি করে ১ হাজার ৬৬২ টাকা ৫০ পয়সা করা হয়। ২০১০ সালের মজুরি বোর্ডে শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ৩ হাজার টাকা করা হয়। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে ৫ হাজার ৩০০ টাকা মজুরি কার্যকর হয়েছিল। ২০১৮ সালে ১৪ জানুয়ারি নতুন মজুরি বোর্ড গঠনের পর  নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সভায় পোশাকশিল্পের মালিকেরা মজুরি মাত্র ১ হাজার ৬০ টাকা বৃদ্ধি করার প্রস্তাব দেন। সব মিলিয়ে তাঁরা মজুরি ৬ হাজার ৩০০ টাকা দিতে চান। অন্যদিকে শ্রমিকপক্ষ ১২ হাজার ২০ টাকা মজুরি দাবি উত্থাপন করেছিল। অথচ সে সময় গার্মেন্টস সেক্টরে শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা শ্রমিক সংগঠন গুলো ১৬ হাজার ও ১৮ হাজার টাকা দাবী জানিয়ে আসছিল। অর্থাৎ আন্দোলনকারী শ্রমিক ও শ্রমিক সংগঠন গুলোর সাথে মজুরী বোর্ডে শ্রমিক প্রতিনিধির কোন সমন্বয় ছিল না।

তাই এবারো আমার মনে হয়েছে, কোন সংগঠন কত টাকা নিম্নতম মজুরী দাবী করলো এটা মূখ্য বিষয় না। মূখ্য বিষয় হলো মজুরী বোর্ডে শ্রমিক প্রতিনিধি কত টাকা নিম্নতম মজুরী দাবী উত্থাপন করলো।

তাই সরকারের উচিৎ ছিল নিম্নতম মজুরী বোর্ডে এমন একজনকে শ্রমিক প্রতিনিধি নিয়োগ যার সাথে আন্দোলনকারীদের সমন্বয় আছে। অর্থাৎ রাজপথে ও কারখানায় যে দাবীতে শ্রমিকরা আন্দোলন করছে যাতে সেই দাবিই মজুরী বোর্ডেও উত্থাপিত হয়।

শ্রমিক প্রতিনিধির আন্দোলনকারীদের সাথে সমন্বয় না থাকলে শ্রমিকদের দাবীর প্রতিফলন ঘটবেনা। শ্রমিকদের দাবীর প্রতিফলন না হলে শ্রমিকদের আন্দোলন বন্ধ করা যাবেনা। 

No comments:

Post a Comment

জাতীয় নির্বাচন ২০২৫ এর একটি রোডম্যাপ

  বর্তমানে বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাংবিধানিক কোন ভিত্তি নেই। তবুও যেহেতু একটা আন্দোলনের...