কয়েকদিন ধরে ঢাকা ইপিজেড এর গেইটে কিছু চাকুরী
প্রত্যাশী বেক্তি দাবী তুলেছেন যে, ঢাকা ইপিজেডের কারখানা গুলোতে নারী শ্রমিকের পরিবর্তে
৭০ শতাংশ পুরুষ শ্রমিক নিয়োগ দিতে হবে।
একসময় পোশাক খাতের মোট শ্রমিকের ৮০ শতাংশের
বেশি ছিলেন নারী এবং ২০ শতাংশের কম ছিলেন পুরুষ শ্রমিক কিন্তু বর্তমানে তৈরি পোশাক খাতে নারী শ্রমিকের সংখ্যা
কমছে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান ম্যাপড ইন বাংলাদেশের (এমআইবি)র মতে, পোশাক
খাতে নিযুক্ত মোট শ্রমিকের মধ্যে নারীর সংখ্যা কমে ৫৭ শতাংশে নেমে এসেছে এবং পুরুষ
শ্রমিক বেড়ে ৪৩ শতাংশে।
অথচ একসময় পোশাক খাতের মোট শ্রমিকের ৮০ শতাংশের বেশি ছিলেন নারী। বিশেষ
করে যারা গ্রামাঞ্চল থেকে রাজধানীতে এসে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টা করতেন তারা
এই খাতে কাজ নিতেন।
দেশে অন্যান্য খাতে চাকরির সুযোগ খুব সীমিত থাকায় আশির দশকে মূলত অদক্ষ
নারী শ্রমিকরা পোশাক খাতের হাল ধরেন। বছরের
পর বছর ধরে নারী শ্রমিকদের অবদানে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক সরবরাহকারী হয়ে উঠেছে
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প। বিশ্ব বাজারে তৈরি পোশাকের ৭ দশমিক ৯ শতাংশ বাংলাদেশের
দখলে।
তখন বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় অনেক কম হওয়ায় নারী শ্রমিকরা কম বেতন হলেও
চাকরি নিতে আগ্রহী ছিলেন।
এরপর বহু বছর ধরে পোশাক খাতে পুরুষ শ্রমিকের বিপরীতে গড়ে অন্তত দুজন নারী
শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হতো।
তবে, সাম্প্রতিক সময়ে এই অনুপাত কমেছে।
যার কারনে নারী শ্রমিকের সংখ্যা কমে ৫৭ শতাংশে নেমে এসেছে। এবং পুরুষ শ্রমিক বেড়ে ৪৩
শতাংশে।
তাই আমার মনে হয়েছে যেসব চাকুরী প্রত্যাশী বেক্তিরা দাবী তুলেছেন যে, ঢাকা ইপিজেডের কারখানা গুলোতে নারী শ্রমিকের পরিবর্তে ৭০ শতাংশ পুরুষ শ্রমিক নিয়োগ দিতে হবে। তারা আসলে নারীদের পিছিয়ে রাখতে চাচ্ছেন। কারখানা গুলোতে শ্রমিকদের চাকুরী হওয়া উচিৎ দক্ষতা অনুযায়ী। নারী ও পুরুষ শ্রমিক এর যে যার যে দক্ষতা আছে তার সেই পদে চাকুরী হওয়া উচিৎ। শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ এর বৈষম্য থাকা উচিৎ না।
লিখেছেনঃ খাইরুল মামুন মিন্টু, ট্রেড ইউনিয়ন নেতা।
No comments:
Post a Comment