বাংলাদেশে শ্রমিকদের
আন্দোলনের ইতিহাস অনেক পুরানো হলেও শ্রমিকদের সাথে যে বৈষম্য করা হয় তা সমাধান হয়নি।
বিগত শেখ হাসিনা সরকার শ্রমিকদের নানান প্রতিস্ত্রতি দেওয়া হলেও বাস্তবে তা বাস্তবায়ন
হয়নি বরং শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবীতে আন্দোলন করলে শ্রমিকদের উপর গুলি করে হত্যা, মিথ্যা
মামলা দিয়ে গ্রেফতার ও স্থানীয় সন্ত্রাসীদের শ্রমিকদের উপর হামলা- শ্রমিকদের চাকুরিচ্যুত
করা সহ নানান নির্যাতন । বিগত খালেদা জিয়া সরকারের সময় ২০০৬ সালে গার্মেন্ট শিল্পে
সব থেকে বড় বিদ্রোহ হয়। এই বিদ্রোহের মধ্যে দিয়ে সরকারকে ন্যূনতম মজুরি বোর্ড গঠন ও
শ্রম আইন-প্রণোয়নে বাধ্য হয়। সে সময় বিএনপি সরকার শ্রমিকদের উপর গুলি করে হত্যা, মিথ্যা
মামলা দিয়ে গ্রেফতার ও স্থানীয় সন্ত্রাসীদের শ্রমিকদের উপর হামলা- শ্রমিকদের চাকুরিচ্যুত
করা সহ নানান নির্যাতন চালাই।
তার মানে বার বার
সরকার বদল হলেও শ্রমিকদের গুলি করে হত্যা, মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার ও স্থানীয় সন্ত্রাসীদের
শ্রমিকদের উপর হামলা- শ্রমিকদের চাকুরিচ্যুত করা সহ নানান নির্যাতন করা বন্ধ হয়নি।
শেখ হাসিনা সরকারের
আমলে গার্মেন্ট শ্রমিকরা বাঁচার মত আদর্শ ন্যুনতম মজুরি দাবী জানিয়ে আসলেও তা পাইনি
সর্বশেষ গত বছর ২০২৩ সালে গার্মেন্ট শ্রমিকরা ন্যুনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা দাবী জানালেও
১২ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারন করা হয়। শ্রমিকরা বারবার মজুরি বৃদ্ধি, রেসনিং ব্যবস্থা
চালুর দাবী জানিয়ে আসলেও শ্রমিকরা বাঁচার মত আদর্শ ন্যুনতম মজুরি পাইনি এবং রেশনিং
ব্যবস্থা চালু হয়নি। পোশাক মালিকদের বিত্ত আর জীবনযাপন দেখলে মনে হয় না যে ব্যবসা খারাপ।
২০২২ সালেও ডলারের দর ছিল ৮৬ টাকা। সেই ডলারের দর এখন ১২০ টাকা। অর্থাৎ প্রতি ডলার
রপ্তানি আয়ে আগের চেয়ে তাঁরা বেশি পেয়েছেন ৩৬ টাকা। তা ছাড়া উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হলে
শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরির সঙ্গে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়াও দরকার। সর্বনিম্ন মজুরি
দিয়ে সর্বোচ্চ উৎপাদনশীলতা পাওয়া যাবে না। এই দুইয়ের মধ্যে সমন্বয় আনতে হবে।
সরকার আসে সরকার
যায় শ্রমিকদের ভাগ্য পরিবর্তন হয়না। সরকারে যেই আশুক ঘুরে ফিরে সরকারে মালিকদের প্রভাব
বেশি থাকে। সরকার গুলো মালিকদের খপ্পর থেকে বের হতে পারেন না।
সম্প্রতিক
আশুলিয়া-গাজীপুর সহ বিভিন্ন গার্মেন্ট শিল্প অঞ্চলে পুরুষ শ্রমিক নিয়োগ, চাকুরীর নিশ্চয়তা, প্রডাকশনের চাপ কমানো, শ্রমিক ছাঁটায় বন্ধ সহ শ্রমিকদের
বিভিন্ন দাবী নিয়ে গার্মেন্ট কারখানার শ্রমিকরা এবং চাকুরী প্রত্যাশী শ্রমিকরা
আন্দোলন করছেন।
কয়েকটি
কারখানার মালিক শ্রমিকদের দাবীর বিষয় সমাধান করলেও শিল্পাঞ্চলে আন্দোলন থামেনি বরং
দিনে দিনে আন্দোলন ছড়িয়ে যাচ্ছে।
প্রশ্ন হলো
আন্দোলন কেন ছড়িয়ে পড়ছে। বিশেষ
করে করোনাভাইরাস এর পর থেকে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছ প্রায় দিগুন থেকে তিন গুন। ঘর ভাড়া, জীবন যাত্রার ব্যয় সব কিছু
বেড়েছে। যার কারণে শ্রমিকরা যা বেতন পাই
তা দিয়ে শ্রমিকদের একার পক্ষে চাকুরী করে পরিবার পরিজন নিয়ে জীবন ধারণ করা সম্ভব
হচ্ছেনা। যার কারণে স্বামী-স্ত্রী বা নারী-পুরুষ সমান ভাবে কাজ করতে চান।
কারখানার
প্রকার ভেদ যদি ধরা হয় তাহলে গার্মেন্ট বলতে আমরা বুঝি,ওভেন, ডেনিম, নিটিং আবার নিটিং এর মধ্যে দুই
রকম একটা গেঞ্জি নিটিং আরেকটি সোয়েটার্স নিটিং। আরেকটি কারখানার প্রকার হলো ট্রেক্সটাইল এর
টেক্সটাইলের সাথে যুক্ত কারখানার হলো, স্প্লিং, ডাইনিং, ওয়াশিং। এই সবগুলো কারখানা গার্মেন্ট এর
সাপ্লায়ের সাথে যুক্ত।
কারখানার
প্রকার ও কারখানায় কাজের লাইন ভেদে নারী ও পুরুষ শ্রমিক নিয়োগ দেন মালিকরা। কোন
জায়গায় নারী বেশী আবার কোন জায়গায় পুরুষ বেশী। যার কারণে গড় করলে নারী-পুরুষ শ্রমিকের
খুব বেশী পার্থক্য নেই। তবে
গার্মেন্ট কারখানার ওভেন, ডেনিম, গেঞ্জি নিটিং এর সব থেকে বড়
বিভাগ হলো সুইং সেখানে কাজ করে বেশীর ভাগ নারী শ্রমিক। কারখানার গেইটে নারী ও
পুরুষ শ্রমিক দুজন যদি চাকুরীর প্রত্যাশায় আসে তাহলে গার্মেন্ট মালিকরা নারী
শ্রমিককে নিয়োগ দেন।
যার কারণে দেখা
যাচ্ছে পুরুষ শ্রমিক চাকুরী না পেয়ে বেকার থাকতে হচ্ছে এবং তার স্ত্রীর আয়ের উপর
নির্ভর থাকতে হচ্ছে। তার স্ত্রী একা যে বেতন পাচ্ছে তা দিয়ে পারিবারিক ব্যয় মিটাতে
পারছেন না, অনেক ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ
অশান্তি দেখা দিচ্ছে। পুরুষ শ্রমিক বেকার থাকার কারণে অনেক ক্ষেত্রে তাকে ঘর ঝাড়ু
দেওয়া, রান্নাবান্না, কাপড় ধোয়া,
বাচ্চা সামলানোসহ অনেক ঘরের কাজ করতে হচ্ছে যা সে মনে করছে তার
জন্য অসম্মানের।
যার কারনে
পুরুষ শ্রমিকরা চাকুরী চেয়ে কারখানার গেইটে বিক্ষোভ করছেন এবং তাদের বিক্ষোভে সমর্থন
দিচ্ছে কারখানার ভিতরে থাকা নারী-পুরুষ উভয় শ্রমিকরা। এর সাথে যুক্ত হয়েছে
কারখানায় না পূরণ হওয়া দাবী, অতিরিক্ত প্রডাকশনের চাপ,
কথায় কথায় চাকুরিচ্যুত করা এবং কর্মকর্তাদের খারাপ আচরণ। এর
পাশাপাশি মালিকদের নেতৃত্বের দন্দ, ঝুট ব্যবসার ভাগাভাগি
এবং কিছু সুযোগ সন্ধানি লুটপাট কারী যারা শ্রমিকদের আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে কারখানায়
লুটপাট করেন। সব
মিলিয়ে শ্রমিকদের এই আন্দোলন।
কারখানায়
নিয়োগে নারী-পুরুষের নিয়োগে সমতা নিশ্চিত করা এবং নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে তা উল্লেখ
করা। শ্রমিকদের জীবন মান অনুযায়ী বেতন পুন-নির্ধারিন করা। শ্রমিকদের জন্য রেশনিং
ব্যবস্থা চালু করা। প্রডাকশনের চাপ কমানো। শ্রমিক ছাঁটায়-নির্যাতন বন্ধ করে
চাকুরীর নিশ্চয়তা নিশ্চিত করা। বিজিএমইএ এর শ্রমিকদের তথ্য ভান্ডারে শ্রমিকদের নামে
নিতিবাচক বক্তব্য লিখে কালো তালিকা করা বন্ধ করতে হবে। কারখানায়
কারখানায় শ্রমিকদের সমস্যা গুলো চিহ্নিত করে শ্রমিকদের সাথে আলোচনা করে সমাধান
করা। ঝুট ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। গার্মেন্ট
মালিকরা নিজেদের মধ্যে উস্কানিমূলক বক্তব্য না দেওয়া। শিল্পাঞ্চলে নিরাপত্তা
বাড়ানো।
আমরা দেখছি
শ্রমিকদের সমস্যা সমাধান না করে মালিকরা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব সামনে আনছেন। শ্রমিকরা তাদের
দাবী নিয়ে আন্দোলন করলে দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্র তত্ত্বের কথা আগেও বলা হতো এখনো তাইই
বলা হচ্ছে। অথচ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শ্রমিকদের ভূমিকা একেবারেই কম না।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যেমন ছাত্ররা জীবন দিয়েছে তেমনি শ্রমিকরাও জীবন
দিয়েছে অথচ শ্রমকিদের অবদানের কথা কোথাও স্বীকার করা হচ্ছেনা। শ্রমিকরা বৈষম্য
বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত হছিল তাদের সাথে যে বৈষম্য করা হচ্ছে তা দুরকরার জন্য
কিন্তু সেই বৈষম্য কি দূর হবে?
ইতি মধ্যে বেশ কিছু
কারখানায় শ্রমিকদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকদের নামের তালিকা কারখানার
নোটিশ বোর্ডে টাঙ্গিয়ে দেওয়া হয়েছে। আশুলিয়া এলাকায় বিভিন্ন কারখানায় কয়েক হাজার শ্রমিককে
চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর টঙ্গাবাড়ির ম্যাংগো টেক্স লিমিটেড নামের একটি
কারখানায় কাওসার নামের এক জন শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে এবং গত ১৭ সেপ্টেম্বর
২০২৪ মাসকট গার্মেন্টসের সহকারী সেলাই মেশিন অপারেটর রোকেয়া বেগম নামের এক নারী শ্রমিক
দুই গ্রুপের সংঘর্ষের মাঝে পড়ে নিহত হয়েছে। বহু শ্রমিক গুলি বিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছে এবং
অনেক শ্রমিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকার জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশনস
লিমিটেড কারখানায় শ্রমিকদের তিন মাসের বেতন বকেয়া রেখে কারখানা বন্ধ করে রেখেছে মালিকপক্ষ।
সরকারী ও বিজিএমইএ এর বিভিন্ন পর্যায় থেকে দফায় দফায় শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ এর
আশ্বাস দিয়েও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। শ্রমিকরা গত ২৩ অক্টোবর বকেয়া বেতনের দাবীতে শান্তিপূর্ন
ভাবে বিক্ষোভ করলে শ্রমিকদের উপর নির্বিচারে লাঠি চার্জ ও গুলি চালানো হয়। বহু শ্রমিক
আহত হয় এবং চার জন শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয় তার মধ্যে একজন নারী শ্রমিক চম্পা খাতুন গত
২৭ অক্টোবর ২০২৪ সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
কার্ল মার্কস ভবিষ্যদ্বানী
করেছিলেন শ্রমিকরা যখন নিজের দাবি-দাওয়া আদায়ে সোচ্চার হবে তখনই পুঁজিবাদের ভিত নড়ে
উঠবে। পুঁজিবাদের ধ্বংসস্তূপের ওপর গড়ে উঠবে বৈষম্যহীন সমাজতান্ত্রিক সমাজ। সেই আশা
পুরোটা বাস্তবায়িত না হলেও তার চিন্তা যে ভিত্তিহীন ছিল না তা আজ স্পষ্ট। বাংলাদেশের জুলাই-আগস্ট এর লড়াইয়ের বিজয় বাংলাদেশতো
বটেই অন্যান্য দেশের জনগণকেও নতুন সংগ্রামের পথ দেখিয়েছে। সমগ্র মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস
জন্ম নিয়েছে যে, জনতার ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের শক্তি যেকোনো রাষ্ট্রের চেয়েও শক্তিশালী।
আমাদের দেশের একটি বৃহত্তম রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক শিল্প। মোটা অঙ্কের বৈদেশিক আয় অর্জিত
হয় এই খাত থেকে। যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে এই আয় তাদের জীবনের মূল্যমান বড়োজোর দুই লাখ
টাকা। শ্রমিকদের জীবনযাপন যে কতোটা মানবেতন তা খোলা চোখ থাকলে অবশ্যই দেখা সম্ভব। অথচ
মালিকপক্ষ তাদেরকে দিয়ে যন্ত্রের মতো দিনরাত পরিশ্রম করিয়ে মুনাফার অট্টালিকা গড়ে তুলছে।
দীর্ঘ ৪৫ বছরে এত
কিছু হলেও কেবল একটি জিনিসই বদলায়নি। আর তা হলো পোশাক মালিকদের আচরণ ও মনোভাব। এখনো
পোশাক খাত পরিচালিত হয় সনাতন কায়দায়। ভয়ভীতি দেখিয়ে আন্দোলন দমনই কেবল শিখেছে এই খাতের
সংশ্লিষ্টরা। রাজনৈতিকভাবে পোশাক মালিকেরা এখন এতটাই প্রভাবশালী, যেকোনো সিদ্ধান্ত
নিজেদের স্বপক্ষে আনতে তাদের কোনো সমস্যা হয় না।
গত ৪৫ বছরে বিজিএমইএ
একটি কাজই ভালোভাবে শিখেছে, আর তা হলো সরকারের বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে আন্দোলন দমন,
মজুরির দাবি যতটা কম রাখা যায় তার ব্যবস্থা করা এবং সরকারের কাছ থেকে সুযোগ-সুবিধা
আদায়। তাদের সঙ্গে যুক্ত থাকেন কিছু শ্রমিকনেতাও। যারা অর্থের বিনিময়ে মালিকদের সমর্থন
করেন। বিশেষ করে মজুরিকাঠামো চূড়ান্ত করা এবং আন্দোলন দমন করার ক্ষেত্রে এমনটা বেশি
ঘটেছে।
২০১৩ সালে রানা
প্লাজা ধসের পরে আন্তর্জাতিক চাপে পোশাক খাতে শ্রমিক ইউনিয়ন ব্যবস্থা চালু রাখতে নিবন্ধনপ্রক্রিয়া
শিথিল করা হয়। এখন পর্যন্ত এই শিল্পে নিবন্ধিত আছে ১৩০০ শ্রমিক ইউনিয়ন। বাকি ৭০ শতাংশ
কারখানায় আছে অংশগ্রহণ কমিটি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এসব ইউনিয়ন বা কমিটির নেতৃত্বে আছেন
মালিকপক্ষের অনুগতরা। আর যাঁরা অনুগত নন, প্রতিটি আন্দোলনের পরে তাঁরা নানা হয়রানির
মুখে পড়েন।
শেখ হাসিনার পলায়নের
পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলে দাবি আদায়ে আরও অনেকের মতো আন্দোলনে নেমেছেন পোশাকশ্রমিকেরা।
তবে অন্য সবাই কাজে ফিরে গেলেও অস্থিরতা রয়ে গেছে পোশাক খাতে। কারণ, এখন আর গোয়েন্দা
সংস্থা বা শিল্প পুলিশ দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে আন্দোলন থামাতে পারছে না মালিকপক্ষ। এ অবস্থায়
দাবি দাওয়া জানানোর জন্য যেমন একটি নিয়মতান্ত্রিক উপায় বের করতে হবে, তেমনি তৈরি করতে
হবে দাবি পূরণের আলোচনার পথ অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার। আর যেকোনো আন্দোলন হলেই বাইরের
ষড়যন্ত্র, বিদেশি ইন্ধন-এসব বলাও বন্ধ করা প্রয়োজন।
পুঁজিবাদীদের
শোষণ-শাসনের মুক্তির জন্য শ্রমিকদের রাজনৈতিক চেতনায় শানিত হয়ে দেশে শ্রমিক শ্রেণীর
রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে শোষক বুর্জোয়া শ্রেণির বিকল্প বিপ্লবী শ্রেণি হিসাবে নিজেকে
গড়ে তুলতে হবে। বিভিন্ন দেশে শ্রমিক শ্রেণির নেতৃত্বে বিপ্লব করেছে। পুঁজিবাদী শোষণ-শাসনের
নিষ্ঠুর জাঁতাকল ভেঙে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ গড়ে তুলছে।
শ্রমিক শ্রেণির
নেতৃত্বে শোষণমুক্ত মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার বৈশ্বিক এ সংগ্রামে ব্যর্থতা ও বিপর্যয়
আছে, কিন্তু অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এ একবিংশ শতাব্দীতেও শ্রমিক শ্রেণির এই বৈপ্লবিক সংগ্রাম
এগিয়ে নেওয়া ও তাকে বিজয়ী করা ছাড়া মানবজাতির মুক্তির আর কোনো পথ নেই। বাংলাদেশেও শ্রমিক
শ্রেণির নেতৃত্বে এ সংগ্রামে বিজয়ী হওয়া ছাড়া বাংলাদেশ ও তার শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের
মুক্তি নেই। এ সংগ্রামে শ্রমিক শ্রেণি শুধু নিজেকে মুক্ত করবে না, মুক্ত করবে বঞ্চিত-অবদমিত,
নির্যাতিত-নিপীড়িত, অবরুদ্ধ-অচলায়তনের গোটা সমাজকে।
লিখেছেনঃ
খাইরুল মামুন মিন্টু, আইন বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড
ইউনিয়ন কেন্দ্র।
No comments:
Post a Comment